কী বলবেন
বলুন! প্রত্যাশিত
রায়-ই হয়েছে| বেশ কিছু দিন ধরে জনজীবনের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই
বিচারকদের অতি-তৎপরতা দেখা যাচ্ছিল| এবার
দেখা গেল তাদের কাছ থেকে ইতিহাসের সংজ্ঞাটাও শিখতে হবে| ইতিহাস
আর পুরাণের ফারাকটাও তারা মুছে ফেলতে চান| পুরাণ বা প্রাচীন মহাকাব্য কি করে বুঝতে হয় সেটা জানার
জন্য এদের জর্জ টমসন কিম্বা রাসেল পড়তে হয় না|
আমরা বুঝলাম রাম নামে একজন দেবতা জন্মেছিলেন এবং অযোধ্যার ঠিক ওই
জায়গাটাতেই, যেখানে এখন ‘বাচ্চা রামের’ মূর্তি
পুজো হচ্ছে| যদিও এই মূর্তিটা ১৯৪৯ সালে ২২/২৩ ডিসেম্বর-এর মধ্য রাতে একজন আমলা চোরের
মত ওখানে রেখে আসেন| পরে তিনি একটি রাজনীতিক দলের প্রতিনিধি-ও হন| তবুও ওটা 'বাচ্চা রাম'| ভাগ্যিস মহামান্য বিচারকরা বলে দেননি ওটা ‘রামজির’ ফসিল!
মাননীয় বিচারপতিরা কিসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে এলেন?! চমত্কার উত্তর! "লক্ষ লক্ষ হিন্দুর
বিশ্বাস|" তথ্য প্রমাণ বা দলিল নয়, বিচার চলবে বিশ্বাসের উপর| কয়েক বছর আগে বিজেপি নেতা লালকেষ্ট
আদবানি এটাই বলেছিল| "ইস্যুটা (রাম জন্মভূমি) যুক্তি বা বিজ্ঞান বা মস্তিষ্কের নয়, এটা হৃদয়ের প্রশ্ন|" বিচারপতির দল সেই
গাইডলাইন-ই ফলো করে গেল| এখন প্রশ্ন কোন রামায়ণ-এর বিশ্বাসটা ওরা ধরছেন| মহাকবির আদি রামায়ণ ওরা পড়েননি আমি নিশ্চিত| সংস্কৃত সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক কয়েক খণ্ডে
প্রকাশিত রামায়ণ-কে যদি রামচন্দ্রের কাহিনী বলে ধরে নি, তাহলে দেখা যাবে যে রামের জন্মস্থানের যে ভৌগলিক-নৈসর্গিক বর্ণনা তাতে আছে তার সাথে এই অযোধ্যার
কোনো সাদ্রশ্য-ই নেই| প্রশ্ন উঠতে পারে, এত বছরে নৈসর্গিক বা ভৌগলিক পরিবর্তন ঘটেছে না কি? কিন্তু কতটা পরিবর্তন ঘটেছে, এটা তো
নির্ধারণ করা আধুনিক যুগে এমন কিছু কঠিন ব্যাপার নয়| আসলে বিচারপতিরা বিশ্বাসের পূজারী| তারা কি জানেন এই প্রাকৃতিক বর্ণনার
ভিত্তিতেই উত্তর ভারতে অন্তত পাঁচটা জায়গা আছে যেখানকার সাধারণ মানুষ মনে করেন
তাদের গ্রামই শ্রীরামচন্দ্রের জন্মভূমি? বিচারপতিরা তাদের
বিশ্বাসের উপর আঘাত করলেন কেন?
পুরাণ আর ইতিহাসকে গোলমাল করে ফেললে মস্তিষ্ক
জগতে এক দুর্বৃত্তায়ণ ঘটে যায়| মানসিক ভাবে একজন দুষিত হয়ে পরে, এবং
ক্ষমতাবানদের এই দুর্বৃত্তপনা যেকোনো ধর্ষণকারীর চেয়ে কম অপরাধ নয়| কার্যত
বিচারপতিরা ইতিহাস কেই ধর্ষণ করেছেন|
তাদের দুজন হঠাৎ প্রত্নতত্ত্ব বিশারদ-ও হয়ে
গেছেন| বলে ফেললেন, প্রত্নতত্ত্ব নাকি বলছে ওখানে হিন্দু মন্দির ছিল| (বিচারপতিরা
ভুলে গেছেন বা জানেন না তখন কাপড় পরার চল-ই ছিল না; সেই শিল্পীকে স্মরণ করুন যিনি প্রথম রাম-সীতাকে কাপড় পরিয়েছিলেন| তখন হিন্দু কথাটাই ছিল না—এটা কিন্তু ইতিহাস| তাহলে
হিন্দু মন্দির কথাটার মানে কী?) সেই একজ়িবিট-গুলো বা কোথায়? সেই
প্রত্নতাত্ত্বিকদের কী ক্রস একজামিন করা হয়েছে? খোঁড়া খুঁড়ি করে যে নিদর্শনগুলো পাওয়া গেছে তার যথার্থতা নিয়ে তো প্রত্নতাত্ত্বিক মহলে আন্তর্জাতিক স্তরে-ই যথেষ্ট বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে| আসলে এসব বলে হবে কী? ওরা তো বিশ্বাসে
চলেন! যুক্তিতে বা তথ্যে বা বিজ্ঞানে নয়|
এই রায়ের অপারেটিভ অংশটা আরও মজার| নির্মোহী
ও ওয়াকফ বোর্ড-এর আবেদন দুটো তারা তামাদি হয়ে গেছে বলে খারিজ
করলেন, অথচ রায়ে এক তৃতীয়াংশ করে জায়গাও দিয়ে দিলেন! মানেটা কী? খারিজ হয়ে যাওয়া আবেদনের ওপর রায়? ওদের মস্তিষ্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে|
বিচারপতিদের অভিযুক্ত বা দোষারোপ করছি না| ওরা হাওয়া মোরগ| সামনে সুপ্রিম কোর্ট-এর চেয়ার ফাঁকা আছে, আরও আছে অবসরোত্তর জীবনে কোনো রকমে কমিশনে ভার পাওয়া, রাষ্ট্রদূত হওয়া অথবা রাজনীতিতে যোগ দিয়ে মন্ত্রী
হওয়া| চাকরি জীবনে চোদ্দ আনা, চাকরি-উত্তর
জীবনে বাকি দু আনা| জীবনে ষোলো আনাই
সার্থক করার নাম হলো বিচারপতি|
সমস্যাটা হলো অর্থনৈতিক সংকটের ফাঁস পুরো ব্যবস্থাটার গলায় চেপে বসেছে| বিচার
ব্যবস্থা সহ এই মানুষ খেকো ব্যবস্থাটা এই সংকট থেকে মুক্তি পাবার জন্য যত ছটফট
করছে ততই ফাঁসটা তার গলায় চেপে বসছে| ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মধ্যে বঞ্চনা, লাঞ্ছনা
আর দারিদ্র্য, অবর্ণনীয় ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে| একেকজন
ভারতীয় এখন একেকটা বোমা বিশেষ| ভাড়াটিয়া শাসক-শোষকরা
কার্যত: এই আগ্নেয়গিরির শিখরে বসেই পিকনিক করছেন| জনগণের মধ্যকার এই বিক্ষোভ-বাষ্প বার করে দিতে না পারলে এই ক্ষোভ জন্ম দেবে
বিদ্রোহের, আর এই বিদ্রোহ থেকেই এসে যেতে পারে বিপ্লব| সুতরাং ক্ষোভ নিষ্ক্রমণের জন্য ফুটো তৈরি করতেই সরকারের সমস্ত প্রতিষ্ঠান তৎপর| বিচার
ব্যবস্থাও তার বাইরে নয়| এলাহাবাদ হাই কোর্ট আসলে সমস্যাটাকে ‘সলভ’ না করে ‘শেল্ফ’ করলো এবং এর দ্বারা জনগণের মধ্যে একটা বিভাজনের রেখা টেনে দিল| উদ্দেশ্য একটাই, অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সাধারণ মানুষের ঐক্যের আকাঙ্ক্ষাকে উন্মাদনা দিয়ে ঠেকানো| চিরাচরিত সাম্রাজ্যবাদী কৌশল| এলাহাবাদ হাইকোর্টও তার ব্যতিক্রম নয়| একটু
বেশি নির্লজ্জ ভাবেই বিচারপতিরা দাস-মনোভাবটা দেখিয়ে ফেলেছেন| এটাই যুগের
বৈশিষ্ট্য| প্রত্যেককেই নিজের মুখোশ ছিন্ন করে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে|
bharater bicharbyabosthar kala din
ReplyDeletedear comrade ajijul, we need you in active politics.
ReplyDeleteEder Bichar keo kore na keno...
ReplyDeleteakta kotha-e mone hocche ja vable atonkito hoi...moulobadi sokti-ra kintu akhono taja,kebol sujog-er opekkhaye...tai esob mandir-masjid-er raaidaan adou kono suraha korbe kina ta niye sondigdho...
ReplyDeleteThiki bolechhen Azizulda.Ai roy asole bicharpatider sholo anai purna korbe. Andhakar bharat k alo dekhate pareni ai roy. Shudhu Moulobadider ektu chulke dilo.
ReplyDeleteajijul haq lakho hindur dharmik biswas e aghat korchen...."bachha ram" jatiyo comment kora ta asobhon...thik noy
ReplyDeleteuni muslim...nijer dik theke bichar kore masjid korar pakshapati...uni hindu debota ke "bachha ram" "fossil" jatiyo katha bole onar samprodayik manovab ta fotiye tulchen....socheton hon...uni kin2 onar dharmer dik theke thik e achen..
ReplyDeleteoporer baktabya dekhe bujhte parchhi lekhata safal! thank you aziz da.. :)
ReplyDeletejotharto kothaee likhechhen azizul-da
ReplyDeletebasu
ReplyDeletetor ma ki dhumsi maagi naki, je tui eirom howechis?
azizul chude gelo to toke ber korte giye, nijer sorir chudiye diyeche.
ekhon sob case ta bujhte parlam.
bhalo'e bujhlam re,kata r bachha tui tahole.
tapas da ke khistale, bole rakhchi,
maa, mashi, baap, ar tui sobbai ke giye giye kyalabo.
gnare wicket dokabo mukh diye berobe.
নতুন লেখা কই?
ReplyDeleteChaddi der post gulo delete kara hook.
ReplyDeleteAziz da aaro likhe jaan. Ram-er bachcha der amra samle nebo.